আব্দুল মোত্তালেব সেলিম, নকলা থেকে :
শেরপুরের নকলা উপজেলায় চলতি রোপা আমন মৌসুমে বীজ ধান বিক্রি হচ্ছে বেশী দামে, সাথে রয়েছে প্রাপ্যতা নিয়েও সংকট। যার ফলে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
বিএডিসি অনুমোদিত ব্রি ৪৯, ৫৮, ৫২, ৬২ প্রভৃতি জাতের বীজধানের প্রতি প্যাকেটের কেজি প্রতি মূল্য হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কিন্তু বাজারে বিক্রয় হচ্ছে এর কয়েকগুন বেশী দামে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, ‘বিএডিসি অনুমোদিত রোপা আমন বীজধানের মূল প্রতি কেজি ৩৪ থেকে ৪৫ টাকা।’
কিন্তু স্থানীয় কৃষক সেলিম জানান, উপজেলা শহরস্থ বীজের দোকান থেকে এর কয়েকগুন বেশী টাকা দিয়ে ১০ কেজির ১ প্যাকেট ব্রি ৪৯ বীজধান কিনেছেন। এছাড়াও তিনি ব্রি ৩৪ জাতের বীজ ১শ টাকা কেজি দরে এবং ব্র্যাক সীড কোম্পানির বীজ আরো বেশী টাকা দরে কিনেছেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এপিপিও আতিকুর রহমান ও সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, ‘বিএডিসি বাজারে বীজ প্রদান করে আর বাজার নিয়ন্ত্রণ করে কৃষি অফিস।’
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ জানান, ‘চলতি রোপা আমন মৌসুমে বিএডিসি ২১৩ টন বীজ বরাদ্দ দিয়েছে।’
মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই ধরণের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি সত্য নয় এবং এ ধরণের বৃদ্ধির খবরও তার জানা নেই।’
বীজ ব্যবসায়ীদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গত ৩ বছরে ৬টি মৌসুমে আমরা বীজ ব্যবসায় লোকসান খেয়েছি সেদিনতো কেউ দেখেনি আমাদের হাল-অবস্থা। এবার আমাদের একটু ব্যবসা হয়েছে।’
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার রোপা আমন মৌসুমে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপন করার লক্ষমাত্রা নির্ধারিত থাকায় এ উপজেলাতে হাইব্রিড জাতের বীজ ১০ হেক্টর জমিতে, উবষী জাতের ৩৭৫ হেক্টরে এবং স্থানীয় নানা জাতের বীজ ৪২০ হেক্টর জমিতে বপন করার কথা।
কিন্তু স্থানীয় কৃষক পর্যায়ে কিংবা উপজেলা ফার্মাস সীড সেন্টারে পর্যাপ্ত বীজ সংরক্ষন করা হয়নি। স্থানীয় ১২৫ মে.টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বীজ সংরক্ষণাগারে বীজ সংরক্ষিত হয়েছে মাত্র ৯টন। আর বীজ সংকটের এটাও একটি অন্যতম কারণ হিসাবে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে পৌর এলাকার একজন বীজ ডিলার ও বীজ সংরক্ষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, `বীজ ব্যবসা লাভজনক নয়। কেননা ১টন ধান ফার্মার্স সীড সেন্টারে বীজ হিসেবে রাখতে গেলে মাশুল দিতে হয় সাড়ে ৫ হাজার টাকা। এছাড়াও রয়েছে ছাটাই-বাছাই, চিটা, পোকা-মাকড়ের উপদ্রব। ফলে কৃষকরা ফার্মার্স সীড সেন্টারের প্রতি বিমুখ।’